সোমবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারও একঘেঁয়ে ট্রেড করছিল, যেমন তারা বলে, "না মাছ, না মাংস"। গুরুত্বপূর্ণ মারে স্তর "8/8" - 1.3184 অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়ে এই জুটি দিনের বেশিরভাগ সময় মুভিং এভারেজ লাইনের সামান্য উপরে অবস্থান করছিল। সুতরাং, ইউরো এবং পাউন্ড উভয়ই তাদের উপরে উঠার পথে অপ্রতিরোধ্য বাধার মুখোমুখি হয়েছিল, যেখান থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে উভয় মুদ্রাই বাউন্স হয়েছিল। অর্থাৎ, উভয়ের প্রযুক্তিগত চিত্র এখন প্রায় একই রকম দেখায়। সেক্ষেত্রে, পাউন্ড স্টার্লিং-এর ক্ষেত্রেও নতুন পতনের আশা করা হচ্ছে। মনে রাখবেন যে পাউন্ড ইউরোর চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ মুদ্রা। এদিকে যুক্তরাজ্য জুড়ে উচ্চারিত নিষধাজ্ঞাগুলো কেবল একটি কথাই বলছে: লন্ডন রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্যতম উৎসাহী প্রতিপক্ষ। বিশেষ করে, লন্ডনই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস ত্যাগ করার প্রস্তাব করেছিল। এবং, এই সপ্তাহে ইউরোপীয় সংসদ রাশিয়ান ফেডারেশনের তেল ক্রয় প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে ব্রিটেনকে সমর্থন করে। তবে ওয়াশিংটনের অবস্থান এ ক্ষেত্রে পরিস্কার বোঝা যায়। রাশিয়ান ফেডারেশন তাদের জন্য দুটি বিশ্ব প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটি। রাশিয়াকে দুর্বল করার যেকোন সুযোগ কে কাজে লাগানো থেকে পিছিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অসম্ভব। আমেরিকা কার্যত কোনওভাবেই রাশিয়ান অর্থনীতির উপর নির্ভর করে না, তারা সেখান থেকে তেল এবং গ্যাস আমদানি করে না এবং আমেরিকান সংস্থাগুলো রাশিয়াকে যে পরিমাণ পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহ করে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। যাই হোক না কেন, সাধারণ আমেরিকানরা এবং আমেরিকান কোম্পানিগুলো সবসময়ের মতোই লোকসান বহন করবে এবং সমস্ত ঝুঁকি এবং ক্ষতি আবার সাধারণ আমেরিকানদের কাছ থেকেই পুষিয়ে নেয়া হবে। এমন নয় যে জো বাইডেন রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কোনও নিষেধাজ্ঞা-জনিত ক্ষতি তার পকেট থেকে পুষিয়ে দেবে। যাইহোক, এই বিষয়টি সমস্ত বিশ্ব নেতাদের জন্যই একইরকম। উচ্চবিত্তরা যুদ্ধ করছে, নিম্নবিত্তরা যুদ্ধের খেসারত দিচ্ছে। তবে ব্রিটিশ অর্থনীতি আরও গুরুতর বিপদের মধ্যে পড়তে পারে, কারণ এটি রাশিয়ান ফেডারেশনের তেল ও গ্যাস শিল্পের উপর বেশি নির্ভরশীল। এবং এটি ইউরোপীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রেও একই, যা রাশিয়া থেকে হাইড্রোকার্বন কিনতে অস্বীকার করলে গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
লন্ডন সক্রিয়ভাবে রাশিয়ান অলিগার্চদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
ব্রিটেন বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল যারা রাশিয়ান অলিগার্চদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তারা বিশ্বাস করেছিল যে অলিগার্চরা ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রভাবিত করবে এবং ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে। গতকাল, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন যে রাশিয়ান অলিগার্চদের বিরুদ্ধে আরোপিত সমস্ত নিষেধাজ্ঞা কখনই প্রত্যাহার করা হবে না এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি চিরতরে বাজেয়াপ্ত করা হবে। মনে হচ্ছে ব্রিটেন এই বিষয়ের স্বার্থে তার আইন পরিবর্তন করতেও প্রস্তুত। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয় যে রোমান আব্রামোভিচের মালিকানাধীন চেলসি ফুটবল ক্লাব সহ কয়েকশ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বেশ কয়েকটি ইয়ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এছাড়া, রাশিয়ান অলিগার্চদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবং অনেক ইইউ দেশ এই উদাহরণ অনুসরণ করতে শুরু করেছে। যেমন, গতকাল জান গিয়েছে যে পোল্যান্ড তার ভূখণ্ডে সমস্ত রাশিয়ান সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে প্রস্তুত।
একই সাথে, লন্ডন জানে যে অদূর ভবিষ্যতে, তেল ও গ্যাসের বাজার অনেক পরিবর্তিত হবে, এবং মস্কোর উপর চাপ অব্যাহত রাখতে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তনের কয়েক মাস মাস পরেই তা যাতে তুলে না নিতে হয় সেজন্য, শুধুমাত্র একটি জিনিস প্রয়োজন হবে। আর তা হলো ন্য উৎস থকে তেল সরবরাহ করা যা রাশিয়ান তেল কে প্রতিস্থাপিত করবে। অতএব, যুক্তরাজ্য সরকার উত্তর সাগরে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের লাইসেন্সিতস-এর একটি নতুন রাউন্ড পরিচালনা করতে যাচ্ছে। সুতরাং, অদূর ভবিষ্যতে ব্রিটিশ তেল ও গ্যাস শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আসতে পারে, যা দেশটিকে নতুন তেলক্ষেত্র খুঁজে পেতে এবং আরও তেল উত্তোলনে সহায়তা করবে। লন্ডন বুঝতে পারে যে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে তেলও বিক্রি করতে পারে, যা অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ান তেল কিনতে অস্বীকার করতে পারে এবং "কালো সোনার" বর্তমান দামের পরিপ্রেক্ষিতে তা থেকে ব্যাপক লাভবান হতে পারে। অতএব, যেমনটি আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে এখন অনেক কিছু পরিবর্তন হতে চলেছে। এবং এই "অনেক" বিষয়টি বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
GBP/USD জোড়ার দৈনিক "গড়" অস্থিরতা 101 পয়েন্ট। সুতরাং, আমরা আশা করি যে ২২ মার্চ, মঙ্গলবার এই পেয়ার 1.3065 এবং 1.3267 এর সীমিত চ্যানেলের ভেতরে অবস্থান করবে। হাইকেন আশি সূচকের ডাউনওয়ার্ড রিভার্সাল নিম্নগামী আন্দোলনের সম্ভাব্য পুনরুদ্ধারের সংকেত দেয়।
নিকটতম সমর্থন স্তর:
S1 - 1.3153
S2 - 1.3123
S3 - 1.3092
নিকটতম প্রতিরোধ স্তর:
R1 - 1.3184
R2 - 1.3214
R3 - 1.3245
ট্রেডিং পরামর্শ:
৪ ঘন্টার টাইম-ফ্রেমে GBP/USD পেয়ারটি উপরে উঠতে শুরু করেছে, যা খুব দ্রুত শেষ হতে পারে, কারণ 1.3184-এর স্তর অতিক্রম করা যাবে না। সুতরাং, এই সময়ে, হাইকেন আশি সূচকটি নিচের দিকে রিভার্স না হওয়া পর্যন্ত আপনার 1.3214 এবং 1.3245 স্তরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে লং পজিশন ধরে থাকা উচিত। শুধুমাত্র মুভিং এভারেজের নিচে 1.3092 এবং 1.3062 এর লক্ষ্যমাত্রা মূল্য নির্ধারিত হলেই আপনি শর্ট পজিশন খোলার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
চিত্রের বিশ্লেষণ:
লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তবে প্রবণতাটি শক্তিশালী হবে।
মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, মসৃণ) - স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং এখন কোন দিকে ট্রেড করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
মারে স্তর - প্রবণতা এবং সংশোধনের লক্ষ্য মাত্রা।
অস্থিরতার মাত্রা (লাল রেখা) - বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে, সম্ভাব্য মূল্য চ্যানেল যেখানে মুদ্রা-জোড়া পরের দিন অবস্থান করবে।
CCI সূচক - এটির বেশি বিক্রি হওয়া এলাকায় (-250-এর নিচে) বা অতিরিক্ত কেনা এলাকায় (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে একটি বিপরীতমুখী প্রবণতা বেশ নিকটে চলে এসছে।