সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার কোনো বাধা ছাড়াই নিচে নামতে থাকে। মনে আছে নিশ্চয় যে গত শুক্রবার এই পেয়ার অস্থিরতার বিপরীত রেকর্ড স্থাপন করেছিল এবং সোমবার এটি খুব দুর্বল এবং মন্থরভাবে ভাবে মুভমেন্ট করেছে। এমন ধীরগতির মুভমেন্টের মধ্যেও, একটি নিম্নগামী প্রবণতা দৃশ্যমান ছিল। গত সপ্তাহে, বুধবার সন্ধ্যায় একটি আকস্মিক ঊর্ধ্বমুখী লাফ সত্ত্বেও, এই পেয়ার মুভিং এভারেজ লাইনের উপরে স্থির হতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল সিস্টেমের সমস্ত প্রবণতা সূচক নিম্নগামী প্রবণতা নির্দেশ করছে৷ ফলস্বরূপ, ইউরোপীয় মুদ্রার এখন প্রবৃদ্ধির এমনকি প্রযুক্তিগত কোনো ভিত্তি নেই। আমরা ইতোমধ্যে একাধিকবার সামষ্টিক অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক এবং মৌলিক ভিত্তি সম্পর্কে কথা বলেছি, তারা সাধারণত দ্রুত বা এক-দুই দিনেই পরিবর্তন হয় না। সুতরাং, ইউরোপীয় মুদ্রার পতনের ধারাবাহিকতা ছাড়া এখন অপেক্ষা করার মত আর কিছু নেই। আমরা এখন আবার লিখতে পারি যে এখনো ফেড এবং ইসিবি-র আর্থিক পদ্ধতির মধ্যে একটি ব্যবধান রয়েছে, যা "রিজার্ভ" মুদ্রা হিসাবে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি করছে, তবে এই সমস্ত খবরই ট্রেডার্সদের দীর্ঘদিন ধরে জানা আছে। অতএব, আসুন আজ আমরা ভূ-রাজনৈতিক বিষয়টির দিকে ঘনিষ্ঠভাবে মনোযোগ দেই এবং আসন্ন সপ্তাহে রুশ- ইউক্রেনীয় যুদ্ধ থেকে কি আশা করা যায় তা বোঝার চেষ্টা করি।
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রায় ২ মাস ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান চলছে। মনে হতে পারে, রাশিয়া ইউক্রেনে একটি "বিশেষ অভিযান" পরিচালনা করছে, কিন্তু ইউক্রেনও মরিয়া হয়ে তার অঞ্চলগুলো রক্ষা করছে। যুদ্ধ শুরুর ২ মাস পরে, নিরাপদভাবেই এটা বলা যায় যে মস্কোর সমস্ত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। স্মরণ করুন যে ফেব্রুয়ারিতে, মস্কো এবং পশ্চিম উভয়ই প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিল যে কিয়েভকে তিন দিনের মধ্যে দখল করা যেতে পারে। আর এই পুরো সামরিক অভিযানে সময় লাগবে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ। বুঝতেই পারছেন যে, এই পূর্বাভাসগুলো বিটকয়েনের ভবিষ্যত মূল্যের পূর্বাভাসের অনুরূপ ছিল। এই মুহুর্তে, আমরা অনুমান করতে পারি যে রাশিয়ান সৈন্যরা কেবল খেরসন এবং মারিউপোল দখল করে রেখেছে। তদুপরি, মারিউপোলে লড়াই অব্যাহত রয়েছে এবং খেরসনে প্রায়শই ইউক্রেনীয় বেসামরিক লোকেদের সমাবেশ চোখে পড়ছে। ইউক্রেন জুড়ে রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে, তবে এখন আমরা অন্য কিছুতে মণোযোগ দেব।
এই সংঘাতের কাল্পনিক পরিণতি কি হতে পারে? কিয়েভ তার নিজস্ব পথে চলতে চায়, এবং তারা কোনোভাবেই রাশিয়ার অনুষঙ্গ হতে চায় না। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নের "ইউরোপীয়" পথ বেছে নিয়েছে, এবং এটি ভাল বা খারাপ যাই হোক তা সমগ্র জনগণের পছন্দ, এবং ভ্লাদিমির জেলেনস্কিই ইউক্রেনের বৈধ, বিশ্ব-স্বীকৃত রাষ্ট্রপতি। সুতরাং, ইউক্রেনীয় জনগণের স্বাধীনভাবে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করার এবং তাদের উন্নয়নের পথ বেছে নেয়ার অধিকার রয়েছে। এদিকে ক্রেমলিন বিশ্বাস করে না যে ইউক্রেনীয়দের বেছে নেয়ার অধিকার থাকা উচিত এবং তারা ইউক্রেনের ভূখণ্ডে কোনোভাবেই ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি চায় না। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত রাশিয়া ঠিক তার পাশেই একটি ন্যাটো ঘাঁটি দেখতে পারে, যেহেতু ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন এই গ্রীষ্মে ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়, যার অর্থ দাঁড়াবে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটির স্থাপন। এবং ক্রেমলিন এখন আবার ফিনল্যান্ডে আরেকটি "বিশেষ অপারেশন" পরিচালনা করতে চাইবে তার সম্ভাবনা কম।
ন্যাটো ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে যে তারা কাছাকাছি সময়ে ইউক্রেনকে তাদের সাথে যুক্ত করবেনা, এবং কিয়েভ বলেছিল যে ন্যাটোর উচিৎ তাদেরকে যোগ দিতে বলা। তাহলে যদি ইউক্রেন ন্যাটোতে নাই থাকে, কেন এখনো যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে? আমাদের মতে, ন্যাটোর বিষয়টি একটি ছুঁতো মাত্র। মস্কো ইউক্রেনের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাই সামরিক "বিশেষ অভিযান" অব্যাহত রয়েছে, যার লক্ষ্য এখন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের যতটা সম্ভব এলাকা দখল করা। যেমনটা ডনবাসের সাথে হয়েছিল। অবশ্যই, আপনি স্থানীয় জনসংখ্যার মধ্যে যত খুশি গণভোট করতে পারেন, কিন্তু কল্পনা করুন তো যদি যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকোতে সৈন্য পাঠায় এবং ৫২ তম রাজ্য হিসাবে তাদের সাথে যোগদানের জন্য সেখানে গণভোট আয়োজন শুরু করে। সুতরাং আপনি যে কোনও রাজ্যকে যে কোনও দেশের সাথেই সংযুক্ত করতে পারেন, প্রধান বিষয়টি হলো সৈন্য প্রবর্তন করা। উপরে আলোচিত বিষয় সমূহের ভিত্তিতে বলা যায় যে, এই যুদ্ধের মূল ট্রফিটি হলো ইউক্রেনীয় সীমানা। কিয়েভ তার জমি ছেড়ে দেবে না, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্ত্রাষ্ট্রের শক্তিশালী সমর্থনের কারনে। তারা কোনোভাবেই ক্রিমিয়া এবং ডনবাস ছেড়ে দেবে না। মস্কোও এই অঞ্চলগুলো থেকে সরে যাবেনা। ফলস্বরূপ, এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না কোনও একটি পক্ষের সম্পূর্ণ পরাজয় হয় অথবা ইউক্রেন বা রাশিয়ার ক্ষমতা পরিবর্তন না হয়।
১৯ এপ্রিল পর্যন্ত গত ৫ ট্রেডিং দিনে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের গড় অস্থিরতা ছিল 81 পয়েন্ট এবং এই মান কে "উচ্চ" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুতরাং, আমরা আশা করি যে আজ এই পেয়ার 1.0710 এবং 1.0872 এর স্তরের মধ্যে অবস্থান করবে। হাইকেন আশি সূচকের ঊর্ধ্বমুখী রিভার্সাল ঊর্ধ্বমুখী সংশোধনের একটি নতুন রাউন্ডের সংকেত দেবে।
নিকটতম সমর্থন স্তর:
S1 - 1.0742
S2 - 1.0620
S3 - 1.0498
নিকটতম প্রতিরোধ স্তর:
R1 - 1.0864
R2 - 1.0986
R3 - 1.1108
ট্রেডিং পরামর্শ:
EUR/USD পেয়ার মুভিং এভারেজ লাইনের নিচে অবস্থান করছে। সুতরাং, যতক্ষণ না হাইকেন আশি সূচক উপরের দিকে না আসে আমাদের উচিৎ 1.0742 এবং 1.0710 লক্ষ্যমাত্রা সহ শর্ট পজিশন ধরে রাখা। যদি মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে স্থির হয়, তাহলে 1.0986 লক্ষ্যমাত্রা সহ লং পজিশন খোলা উচিৎ।
চিত্রের বিশ্লেষণ:
লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তবে প্রবণতাটি শক্তিশালী হবে।
মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, মসৃণ) - স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং এখন কোন দিকে ট্রেড করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
মারে স্তর - প্রবণতা এবং সংশোধনের লক্ষ্য মাত্রা।
অস্থিরতার মাত্রা (লাল রেখা) - বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে, সম্ভাব্য মূল্য চ্যানেল যেখানে মুদ্রা-জোড়া পরের দিন অবস্থান করবে।
CCI সূচক - এটির বেশি বিক্রি হওয়া এলাকায় (-250-এর নিচে) বা অতিরিক্ত কেনা এলাকায় (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে একটি বিপরীতমুখী প্রবণতা বেশ নিকটে চলে এসছে।