মঙ্গলবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য EUR/USD পেয়ারের তুলনায় বেশি অস্থিরতা প্রদর্শন করেছে, যা সম্ভবত বৃহস্পতিবারে আসন্ন ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের কারণে ঘটেছে। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সুদের হার 0.25% বাড়াবে, যার মাধ্যমে টানা 13 বারের মতো মুদ্রানীতি কঠোর করা হবে। যেহেতু এই সিদ্ধান্তটি পূর্ববর্তী বৈঠক থেকে জানা গেছে এবং পাউন্ডের মূল্য সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, এটি অনুমান করা যেতে পারে যে প্রত্যাশিত সুদের হার বৃদ্ধির বিষয়টি ইতোমধ্যেই বিবেচনা করা হয়েছে। সভা যতই ঘনিয়ে আসছে, যুক্তরাজ্যে আর্থিক নীতি আরও কঠোর করার প্রত্যাশার ভিত্তিতে সম্প্রতি খোলা লং পজিশনে মুনাফা নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
অনেক বিশেষজ্ঞের মতামতের বিপরীতে, ব্রিটিশ পাউন্ডের ট্রেডাররা ইতোমধ্যে সমস্ত সম্ভাব্য বুলিশ প্রবণতা আনতে পারে এমন সব বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছে। গত 10 মাসে পাউন্ডের মূল্যের 2500 পয়েন্ট বৃদ্ধি এই ইঙ্গিতই দেয়। এই সময়ের মধ্যে ব্রিটেনে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রতিবেদন ও ঘটনার অনুপস্থিতি বিবেচনা করে, পাউন্ডের মূল্য ইতিমধ্যে বৃদ্ধির সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। এটা লক্ষণীয় যে ব্রিটিশ পাউন্ড বর্তমানে 2023 সালে উন্নত অর্থনীতির মধ্যে শীর্ষ-কার্যকারি মুদ্রা, যদিও ব্রিটিশ অর্থনীতি টানা চার ত্রৈমাসিক মন্দার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিরা এবং সরকার ধারাবাহিকভাবে নিশ্চিত করছেন যে দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা এড়ানো যাবে এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে। যাইহোক, মূল সুদের হার বৃদ্ধির সাথে সাথে মুদ্রাস্ফীতি অত্যধিক উচ্চস্তরে থেকে যাওয়ায় তাদের বিবৃতি ক্রমবর্ধমানভাবে সন্দেহজনক বলে মনে। আজ, যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, যা পরিস্থিতি স্পষ্ট করতে পারে।
মুদ্রাস্ফীতি পাউন্ডের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে, বাজারের ট্রেডাররা মে মাসে মূল্যস্ফীতিতে সামান্য হ্রাসের আশা করছে, বার্ষিক 0.2% থেকে 0.3% পর্যন্ত, যা সর্বনিম্ন। যদি দেশটির মূল্যস্ফীতি বেশি হ্রাস পায়, তবে এটি পাউন্ডকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে না কারণ কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) বা ভোক্তা মূল্য সূচক অযৌক্তিকভাবে বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপরীতভাবে, মূল্যস্ফীতি হ্রাস কম হলে, এটি এই পেয়ারের দীর্ঘস্থায়ী দরপতন বয়ে নিয়ে আসবে যা ব্রিটিশ অর্থনীতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর আরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। মূল্যস্ফীতির সামান্য হ্রাস বা হ্রাসের অনুপস্থিতি সম্ভবত কঠোর মুদ্রানীতির অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা বর্ধিত সময়ের জন্য বাড়াবে না। তবে, প্রতিবেদনের তাৎপর্যের উপর বাজারের ট্রেডারদের ব্যাখ্যা এখনও নির্ধারণ করা হচ্ছে। এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে বাজারে অসংখ্য ট্রেদার রয়েছে যারা শুধুমাত্র মৌলিক বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করে। তাই, পাউন্ডের দর বাড়তে পারে এমনকি যখন অধিকাংশ মৌলিক পটভূমি এর বিরুদ্ধে কাজ করে।
প্রতিবেদনের প্রতি বাজারের ট্রেডারদের ব্যাখ্যা অনিশ্চিত রয়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির দুর্বল পতনকে 2023 সালে আরেকটি সুদের হার বৃদ্ধির আশা করার একটি অতিরিক্ত কারণ হিসাবে দেখা হবে, যা পাউন্ডের আরও মূল্যায়নের দিকে পরিচালিত করবে। অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতির আরও উল্লেখযোগ্য পতনকে নেতিবাচক হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডকে পরিকল্পনার আগে কঠোরকরণ চক্রটি শেষ করতে এবং পাউন্ড বিক্রি করতে প্ররোচিত করতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, সঠিক মূল্যস্ফীতির মান বা বাজারের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা অসম্ভব।
তাই, মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন, কংগ্রেস ও সিনেটে জেরোম পাওয়েলের বক্তৃতা এবং ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড এর বৈঠকের কারণে বুধ, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের উচ্চ অস্থিরতা দেখা যেতে পারে। এইসময় ট্রেডিংয়ে ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে কারণে এই পেয়ারের মূল্যের গতিপথ প্রায়শই পরিবর্তিত হতে পারে। এই সমস্ত ইভেন্টের প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া এবং স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করে সতর্কতার সাথে ট্রেড করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখনও আশা করি মাঝারি মেয়াদে পাউন্ডের মূল্য হ্রাস পাবে, তবে বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম এই পেয়ারের মূল্যকে নতুন উচ্চতায় ঠেলে দিতে পারে। বর্তমানে, কোন বিক্রয়ের সংকেত নেই।
বিগত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের গড় অস্থিরতা হল 93 পিপ, যা এই পেয়ারের ক্ষেত্রে "গড়" হিসাবে বিবেচিত হয়৷ অতএব, 21 জুন বুধবার, 1.2671 এবং 1.2857 রেঞ্জের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ হাইকেন আশি সূচক বিপরীতমুখী হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পুনঃসূচনা নির্দেশ করবে।
নিকটতম সাপোর্ট স্তর:
S1 - 1.2756
S2 - 1.2695
S3 - 1.2634
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স স্তর:
R1 - 1.2817
R2 - 1.2878
R3 - 1.2939
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
4-ঘন্টার টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের সংশোধন শুরু হয়েছে। বর্তমানে, 1.2817 এবং 1.2857-এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন খোলার কথা বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যদি হেইকেন আশি সূচক উপরের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য বিপরীতমুখী হয়। বিপরীতভাবে, 1.2634 এবং 1.2573-এর লক্ষ্যমাত্রার জন্য মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে কনসলিডেশন হলে শর্ট পজিশনের কথা ভাবা যেতে পারে।
চিত্রের ব্যাখ্যা:
লিনিয়ার রিগ্রেশনের চ্যানেল - এটি বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। উভয় চ্যানেল একই দিকে অগ্রসর হলে, বর্তমান প্রবণতা শক্তিশালী।
মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) - ট্রেডিংয়ের স্বল্প-মেয়াদী প্রবণতা এবং দিক নির্ধারণ করে।
মারে স্তর - মূল্যের মুভমেন্ট এবং সংশোধনের লক্ষ্য মাত্রা।
অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য মূল্য চ্যানেল যেখানে বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে পরের দিন যেখানে এই পেয়ারের ট্রেড করা হবে বলে আশা করা যায়।
CCI সূচক - এই সূচক ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশ করলে প্রবণতার বিপরীতমুখী পরিবর্তন আসন্ন।