মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য কারেকশন করার চেষ্টাও করেনি, অন্তত দিনের প্রথমার্ধে নয়। সাধারণভাবে, ইউরোর মূল্য প্রায় প্রতিদিনই ময়দার খামিরের মতো বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 50-60 পিপসের কারেকশনের আশা করা যেতে পারে। সুতরাং, এই পেয়ারের প্রযুক্তিগত চিত্র অপরিবর্তিত রয়েছে।
যাইহোক, অনেক মুদ্রা বিশ্লেষক এবং বিশেষজ্ঞদের মনোভাবের পরিবর্তন হচ্ছে. এই পেয়ারের মূল্য প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে, এবং এই ধরনের মুভমেন্টের জন্য কিছু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। কিন্তু যখন কোন সংবাদ বা প্রতিবেদন থাকে না তখন আপনি কীভাবে কোন মুভমেন্টের কারণ ব্যাখ্যা করবেন? ঐতিহ্যগত কিছু ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে, যেমন "ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে" বা "ফেডারেল রিজার্ভের ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে"। এটি অস্বীকার করা যায় না যে এই দুটি বাক্যাংশ দিয়ে প্রায় যেকোনো মুভমেন্টকে ব্যাখ্যা করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, যখন কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই মার্কিন ডলারের দরপতন হয়, তার কারণ হিসেবে 'মার্কেটে ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে' বলে উল্লেখ করা যায়।যদি কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই যদি মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যায়, তাহলে 'মার্কেটে ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা কমছে' বলে ব্যাখা দেয়া যায়। এটি পুরোটাই ধাঁধার মতো। ঝুঁকির গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের কারণগুলো কখনই সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করা হয় না। এই ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতার অনুমান করার পদ্ধতিটিও রহস্যজনক। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা যে কোনও মুভমেন্টকে শুধুমাত্র ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের মাত্রার দ্বারা ব্যাখ্যা করেন বলে মনে হয়। বাস্তবে, ব্যাপারটা অনেক সহজ। EUR/USD পেয়ারের মূল্য বেড়েছে কারণ এটি বেশি কেনা হচ্ছে।
এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মার্কেট বড় ট্রেডারদের দ্বারা 'চালিত' হয়, যারা মিলিয়ন এবং বিলিয়ন ডলারের ট্রেডিং করে। বিভিন্ন ব্যাংক এবং বিশাল অংকের তহবিলসম্পন্ন এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে মার্কেট এবং চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রচুর তথ্য রয়েছে, যারা ছোট ট্রেডারদের তুলনায় মার্কেটে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে। তাদের কাছে যেকোন মূল্যকে প্রভাবিত করার এবং তাদের পছন্দসই দিকে চালিত করার সক্ষমতা রয়েছে। এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত দিকটি স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ ট্রেডারদের কাছে প্রকাশ করা হয় না, যারা অধ্যবসায়ের সাথে সংবাদ এবং প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে। তদুপরি, মার্কেট মেকাররা এমনকি সংবাদ, প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ইভেন্টও বিবেচনা করে না। তারা সেটা করতে বাধ্য নয়!
ফলস্বরূপ, আমরা মাঝে মাঝে এমন কিছু মুভমেন্ট দেখতে পাই যার কারণ ব্যাখ্যা করা বেশ কঠিন। উদাহরণস্বরূপ, মার্কেটের ট্রেডাররা জানুয়ারি থেকেই ফেডের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা করেছে। এই পুরো সময়ের মধ্যে, মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমিতে যেটুকু ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ঘন ঘন মার্কিন ডলারের দরপতন হয়েছে। মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরোপীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দুর্বলতা উপেক্ষা করলেও তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক অর্থনীতির দুর্বল তথ্যের প্রতি আগ্রহের সাথে সাড়া দেয়। বছরের শুরু থেকে, মার্কেটের ট্রেডাররা ফেড সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে যা এখনও ঘটেনি, যখন তারা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির নমনীয়করণের প্রতি আগ্রহী নয়। সুতরাং, ইউরোর মূল্যের বর্তমান বৃদ্ধির কোন যৌক্তিকতা নেই। মার্কেটে বড় ট্রেডাররা কাজ করছে, এবং এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাদের নিজস্ব যুক্তি আছে। আমরা শুধুমাত্র তাদের অনুসরণ করার চেষ্টা করতে পারি বা মুভমেন্ট স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেডিং থেকে বিরতি নিতে পারি। এমনকি প্রযুক্তিগত সূচকগুলোও ডলারের বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিলেও তা কাজ করছে না। CCI সূচকটি তিনবার ওভারবট জোনে প্রবেশ করেছে, তবুও এই পেয়ারের মূল্য শান্তভাবে বাড়ছে।
২১ আগস্ট পর্যন্ত বিগত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD-এর মূল্যের গড় অস্থিরতা হল 59 পিপস, যা গড় হিসাবে বিবেচিত হয়। আমরা আশা করছি যে বুধবার এই পেয়ারের মূল্য 1.1052 এবং 1.1171 এর লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। লিনিয়ার রিগ্রেশনের উপরের চ্যানেলটি উপরের যাচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। CCI সূচকটি তৃতীয়বারের মতো ওভারবট জোনে প্রবেশ করেছে, যা কেবলমাত্র চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হয়ে নিম্নমুখী প্রবণতার সূচনাই নয় বরং বর্তমান দর বৃদ্ধি কীভাবে সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক সে ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দেয়।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
- S1 – 1.1047
- S2 – 1.0986
- S3 – 1.0925
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
- R1 – 1.1108
- R2 – 1.1169
- R3 – 1.1230
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিশ্বব্যাপী EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, কিন্তু 4-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট আবার শুরু হয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল এবং মার্কেটে ইউরো ক্রয়ের ও ডলার বিক্রি করার প্রবণতার প্রভাবে হয়েছে। পূর্ববর্তী পর্যালোচনাগুলোতে, আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে আমরা মধ্যমেয়াদে শুধুমাত্র ইউরোর দরপতনের আশা করছি, কিন্তু এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান বৃদ্ধি এখন প্রায় উপহাসের মতো মনে হচ্ছে। যাইহোক, এটি অস্বীকার করা বোকামি হবে যে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং এখনও এর সমাপ্তির কোনও লক্ষণ নেই। মার্কেটের ট্রেডাররা এই পেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রতিটি সুযোগ ব্যবহার করে চলেছে, কিন্তু প্রযুক্তিগত চিত্র স্থানীয় পর্যায়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্তির উচ্চ সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিচ্ছে।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।