মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার একটি হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং চলমান ছিল। কয়েক দিন আগে হয়তো এই ফ্ল্যাট মুভমেন্ট স্পষ্ট ছিল না, তবে এখন এটি যথেষ্ট দৃশ্যমান। এই সপ্তাহে অনেক ট্রেডার এই পেয়ারের মূল্যের প্রবণতাভিত্তিক মুভমেন্ট এবং শক্তিশালী অস্থিরতার প্রত্যাশা করছেন, তবে উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও সবসময় সক্রিয় ট্রেডিং নিশ্চিত করা যায় না। প্রথম দুই দিনের ট্রেডিংয়ে দুটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। প্রথমত, মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরো কেনার প্রতি আগ্রহী নয়, যা যৌক্তিক। দ্বিতীয়ত, মার্কেটে কারেকশন হচ্ছে, তবে তা সাইডওয়েজ মুভমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা যায়। মজার বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্রের JOLTs জব ওপেনিং সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেলেও ডলারের মূল্য তেমনভাবে বৃদ্ধি পায়নি। মার্কেটে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে, তবে এই ফ্ল্যাট রেঞ্জে যেকোনো মুহূর্তে নতুন নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবারের ৫-মিনিটের চার্টে দুটি সেল সিগনাল গঠিত হয়েছিল, তবে দিনের শুরুতে অস্থিরতা কম থাকায় নতুন ট্রেডাররা এই সিগনাল থেকে লাভ করতে পারেনি। প্রথম ক্ষেত্রে, মূল্য ১৫ পিপস নিচে নেমেছিল, যা স্টপ লস দিয়ে ব্রেকইভেনে ট্রেড ক্লোজ করার সুযোগ দেয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, সিগনাল দিনের শেষভাগে গঠিত হয়েছিল। এমনকি ট্রেডাররা এটি কার্যকর করলে, তারা সম্ভবত লোকসান এড়াতে পেরেছেন। আজ এই পেয়ারের মূল্যের আরও নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশনের প্রচেষ্টা চলমান আছে, তবে ইউরোর মূল্যের কেবলমাত্র সীমিত এবং ধীরগতির ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের মূল্য 1.0451 এবং 1.0596 লেভেলের মধ্যে একটি হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে অবস্থান করছে। দুই মাস ধরে চলমান নিম্নমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও মার্কেটে ইউরো ক্রয়ের কোনো প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
বুধবার আমরা মনে করি যে, এই পেয়ারের পতন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্টগুলো সাধারণত অনেকটাই এলোমেলো হয়ে থাকে, যা ট্রেডারদের মাথায় রাখা উচিত।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিং করার জন্য এই লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896। দিনের প্রধান ইভেন্টগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের বক্তৃতা ও ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তৃতা রয়েছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রে ISM থেকে পরিষেবা সংক্রান্ত PMI প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে মূল্য হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে থাকায় সেটি ট্রেডিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।